এই টিউটোরিয়াল গুলোতে শেখানো হবে কীভাবে এনড্রয়েড অ্যাপস তৈরী করতে হয় । আশা করি সকলেই শেষ পর্যন্ত থাকবেন ।
এনড্রয়েড কি ?
এনড্রয়েড হলো লিনাক্স ভিত্তিক গুগলের মালিকানাধীন মোবাইল বা ট্যাবলেট পিসির জন্য একটি অপারেটিং সিস্টেম । যা সি (কোর), সি++, ও জাভা(ইউআই) প্রোগ্রামিং ভাষা দিয়ে তৈরী । আপনি যদি কম্পিউটার ব্যবহার করেন তাহলে আপনার অপারেটিং সিস্টেমের প্রয়োজন হবে যেমনঃ উইন্ডোজ ৭, উইন্ডোজ ৮, উইন্ডোজ ৯, লিনাক্স বা ম্যাক । এনড্রয়েড হল তেমন একটি অপারেটিং সিস্টেম যা মোবাইল ফোন বা ট্যাবলেটের জন্য ব্যবহার হয় । তাছাড়া রয়েছে আরও কিছু জনপ্রিয় মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম যেমনঃ জাভা, এপলের iOS, নকিয়ার Symbian, রিম’এর ব্ল্যাকবেরি OS, মাইক্রোসফটের Windows Phone ইত্যাদি । তবে বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম হল এনড্রয়েড ।
এনড্রয়েড ফোন বা ট্যাবলেট কি ?
মোবাইল ফোন বা ট্যাবলেট প্রস্তুতকারক যেসকল কোম্পানি তাদের মোবাইল ফোন বা ট্যাবলেট ডিভাইসে এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে সেটিই হল এনড্রয়েড ফোন বা ট্যাবলেট, বর্তমানে অনেক মোবাইল ফোন ও ট্যাবলেট প্রস্তুতকারক কোম্পানী এনড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে তাদের মধ্যে Samsung, Symphony, Micromax Acer, Alcatel, Dell, Gigabyte, HTC, Huawei, LG, Motorola, Nexus, T-Mobile, Toshiba, Vodaphone, ZTE ছাড়াও আমাদের দেশের জনপ্রিয় মোবাইল কোম্পানী WALTON ও এই জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেমটি ব্যবহার করে ।
ইতিহাস
২০০৩ সালের অক্টোবরে ক্যালিফোর্নিয়ার পালো আল্টোয় এনড্রয়েড ইনকর্পোরেট প্রতিষ্ঠা হয়েছিল । এটির প্রধান প্রতিষ্ঠাতা এন্ডি রুবিন এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা ডেন্জারের, তাছাড়া রিচ মাইনার যিনি ওয়াইল্ডফায়ার কমউনিকেশনস এ নিয়োজিত ছিলেন, ইনকর্পোরেটেডের সহ প্রতিষ্ঠাতা, নিক সিয়ারস তিনি টি-মোবাইলের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্টএবং ক্রিস হোয়াইট তিনি ওয়েবটিভি’র ডিজাইন এবং ইন্টারফেস প্রধান ছিলেন ।
যেহেতু তারা এক এক জন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে নিয়োজিত ছিলেন তাই এনড্রয়েড প্রতিষ্ঠানটি তার কার্যক্রম চালাত অনেকটা লুকিয়ে প্রতিষ্ঠান থেকে এটা বলা হত যে তারা শুধু মোবাইলের একটি সফটওয়্যারের কাজ করছে ।
এনড্রয়েড এবং গুগল এর সম্পর্ক
২০০৫ সালের আগষ্ট মাসে বিশ্বের সেরা আইটি কোম্পানী সার্চ জায়েন্ট গুগল এনড্রয়েড প্রতিষ্ঠানটি কিনে নেয় এবং এটাকে এর অধীনস্থদের তথা এন্ডি রুবিন, রিচ মাইনার এবং ক্রিস হোয়াইট কে গুগল ইনকর্পোরেটের সহ প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি দেযইয় । এনড্রয়েড যখন গুগল কিনেছিল তখন এর সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি, তবে অনেকেই ধারনা করেছিল যে গুগল মোবাইল বাজারে আসতে যাচ্ছে ।
ওপেন হ্যান্ডসেট এল্যায়েন্স এর সূচন
৫ই নভেম্বর, ২০০৭ সালে ওপেন হ্যান্ডসেট এল্যায়েন্স সূচনা করে যাতে ছিল ব্রডকম কর্পোরেশন, গুগল, এইচটিসি, ইন্টেল, এলজি, মার্ভেল টেকনোলজি গ্রুপ, মটোরোলা, এনভিডিয়া, কোয়ালকম, স্যামস্যাঙ ইলেক্ট্রনিকস, স্প্রিন্ট নেক্সটেল, টি-মোবাইল এবং টেক্সাস ইনস্ট্রুমেন্ট। ওপেন হ্যান্ডসেট এল্যায়েন্সের উদ্দেশ্য হল মুক্ত ধরনের মোবাইল হ্যান্ডসেট প্লাটফর্ম তৈরী করা । একই দিনে, ওপেন হ্যান্ডসেট এল্যায়েন্স তাদের প্রথম পন্য এনড্রয়েড ছাড়ে যা লিনাক্স কারনেল ২.৬ এর উপর ভিত্তি করে তৈরী হয়েছিল ।
৯ই ডিসেম্বর, ২০০৮ সালে, আরো ১৪ নতুন সদস্য যোগ দেয় যাতে ছিল এআরএম হোল্ডিংস, এথিরস কমিউনিকেশনস, আসুসটেক কম্পিউটার ইনকর্পোরেট, জারমিন লিমিটেড, হাওয়াই টেকনোলজিস, প্যাকেটভিডিও, সফটব্যাংক, সনি এরিকসন, তোসিবা কর্পোরেশন এবং ভোডাফোন গ্রুপ ।
এনড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম এর লাইসেন্স
২০০৮ সালের অক্টোবরের ২১ তারিখ পর্যন্ত এটিকে পাওয়া যেত ওপেন সোর্স লাইসেন্সের আওতায় । তারপর গুগল তাদের পুরো সোর্স কোড ছাড়ে এপ্যাচি লাইসেন্সের আওতায় । গুগল তাদের প্রকাশিত কোডগুলোকে উন্মুক্ত করে সবার দেখার জন্য ও পাশাপাশি মন্তব্য করার সুযোগও দেয় । যদিও সফওয়্যারটি উন্মুক্ত, তবুও মোবাইল প্রস্ততকারকরা এনড্রয়েড ব্যবহার করতে পারবে না কারণ গুগলের ট্রেডমার্ক করা অপারেটিং সিস্টেমের কপি গুগল সার্টিফিকেট প্রদান করার আগ পযর্ন্ত কেউ ব্যবহার করতে পারবে না ।
এনড্রয়েড ভার্সন তথ্য
এন্ড্রয়েডের আসল ভার্সনের প্রকাশের পূর্বে বেশ কিছু আপডেট দেখা যায় । এইসব আপডেটগুলো মূল অপারেটিং সিস্টেমে চলা আগে পরিক্ষামূলক দেখা হচ্ছিল যেখানে বিভিন্ন বাগ (সফটওয়্যারের ভুল) ঠিক করা হয় এবং নতুন ফিচার যোগ করা হয়। সাধারণত, নতুন প্রত্যেকটি ভার্সনের কোড নাম থাকে এর উল্লেখ্যযোগ্য পরিবর্তন এবং বাগ ঠিক করার উপর । আগের আপডেটগুলোর মধ্যে আছে কাপকেক এবং ডোনাট কোড নামগুলো আবার বর্ণানুক্রিমভাবে সাজানো যেমন কাপকেক, ডোনাট, এক্লিয়ার, ফ্রোয়ো, জিন্জারব্রেড, হানিকম্ব । (তথ্য সূত্রঃ উইকিপিডিয়া)
এনড্রয়েড কেন জনপ্রিয়
এনড্রয়েড অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেম গুলোকে পিছনে ফেলে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে ও পরিচিত লাভ করছে । আর এর প্রধান কারণ হল এনড্রয়েডের রয়েছে ব্যবহার বান্ধব ইন্টারফেস অর্থাৎ আপনি যদি একটি জাভা আপস তৈরী করেন তাহলে যা ডিভাইসের জন্য তৈরী করা হয়েছে তার মধ্যেই সাপোর্ট করে তথা আপনি যদি Nokia C3-00 একটি জাভা এপ্লিকেশন তৈরী করেন তাহলে তা Nokia 5130 এর মধ্যে ভালবাবে সাপোর্ট করবে না যদিও করে তবে আপস এর সাইজ গুলো ঠিক থাকবে না । দেখা যাবে ডানের টা বামে আর বামের টা ডানে এসে পরেছে অথবা একটি না একটি সমস্যা হবেই । আর আপনি যদি এনড্রয়েড আপস বানান তাহলে সকল ডিভাইসে সাপোর্ট করবে । তাছাড়া এটি লাইসেন্স ফ্রী মুক্ত অপারেটিং সিস্টেম যে কারণে দিন দিন লিনাক্স ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে চলছে, সে কারণেই আমরা অনেকেই এনড্রয়েডের প্রতি আকর্ষিত হচ্ছি ।
বেসিক এনড্রয়েড অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট টিউটোরিয়াল [পর্ব-০২] :: প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার
প্রথম পর্বে এনড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম এবং এনড্রয়েড অ্যাপস সম্পর্কে খুঁটিনাটি আলোচনা করা হয়েছিল । আজ আলোচনা করা হবে এনড্রয়েড অ্যাপস তৈরীতে যা যা প্রয়োজন সে গুলো নিয়ে ।
পূর্ব প্রস্তুতি
সবকাজেই কোন না কোন প্রস্ততির প্রয়োজন হয় । আর তেমনি এনড্রয়েড অ্যাপস তৈরীতেও পূর্ব প্রস্ততির প্রয়োজন রয়েছে । এনড্রয়েড অ্যাপস তৈরীর জন্য অবশ্যই আপনার একটি ভাল মানের কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ এর প্রয়োজন ।
এবং সবচেয়ে বড় প্রস্ততি হল আপনাকে প্রথমে এনড্রয়েড ব্যবহারকারী হতে হবে । এবং অ্যাপস গুলোর কাজ সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে । তাছাড়া ওয়েব প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ HTML, CSS জানা থাকা দরকার এবং প্রোগ্রামিং JAVA জানা থাকা ভাল ।
প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ও প্লাগিন
এনড্রয়েড অ্যাপস তৈরীতে কিছু সফটওয়্যার এর প্রয়োজন হয় । এদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহারিত হল জাভার JDK(Java Development Kit,) ও এনড্রয়েড এর ADT Plugin ও SDK সহ একত্রে ADT Bundle (এটি এনড্রয়েড এর নিজস্ব)
JDK ডাউনলোড লিংক
এখান থেকে আপনার কম্পিউটার এর অপারেটিং সিস্টেম অনুযায়ী অর্থাৎ 32 বা 64-bit এর ফাইলটি ডাউনলোড করে নিন ।
কীভাবে বুঝবেন আপনার কম্পিউটারে কত বিট এর অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে ?
প্রথমে আপনার কম্পিউটার এর Computer Menu তে যান ও সবার নিছে Properties লিখায় ক্লিক করুন তারপর এমন একটি এন্টারফেছ আসবেঃ

উপরে লক্ষ করুন লাল দাগের ভিতর লিখা 32-bit Operating System অর্থাৎ আমার কম্পিউটারে ৩২ বিট অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করেছি ।
এখন জাভার JDK লিঙ্কে ক্লিক করার পর এমন একটি এন্টারফেছ আসবেঃ

এবং উপরের Download বাটনে ক্লিক করুণ তার পর এমন আসবে

এখান থেকে আপনার টি বাছাই করুণ এবং Accept License Agreemen ক্লিক করে ডাউনলোড শুরু করুণ ।
ADT Bundle
এনড্রয়েড ADT(Android Development Kit) Plugin & SDK (Software Development Kit) এক সাথে ADT Bundle এটি এনড্রয়েড এর নিজস্ব সাইট থেকে ডাউনলোড করে নিন পূর্বের নিয়মে তথা আপনার কম্পিউটার এর অপারেটিং সিস্টেম অনুযায়ী ।
ডাউনলোড লিংক
পরবর্তী টিউটোরিয়াল দেখার আমন্ত্রণ জানিয়ে আজ এখানেই শেষ করলাম ।
বেসিক এনড্রয়েড অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট টিউটোরিয়াল [পর্ব-০৩] :: JDK ইন্সটল
আজ এনড্রয়েড অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট টিউটোরিয়াল এর ৩য় পর্ব JDK (Java Development Kit) এর ইন্সটল নিয়ে আলোচনা করব । আমার সাথেই থাকুন ।
গত পর্বে আমরা এনড্রয়েড অ্যাপস তৈরীর প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার গুলো ডাউনলোড করেছিলাম, আর আজ আমরা এগুলো ইন্সটল করব ও এর ভিতরের এন্টারফেচ দেখব ।
যাইহোক আমরা JDK ডাউনলোড দেওয়ার পর সফটওয়্যারটিকে নিচের মত দেখাবেঃ

এখন এই সফটওয়্যারটির উপর ডাবল ক্লিক করুন এবং Yes বাটন চাপুন, তাহলে নিচের মত একটি এন্টারফেচ আসবেঃ

এখানে Next > বাটনে ক্লিক করুন । তারপর নিচের মত আসবেঃ

পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী Next > বাটনে ক্লিক করুন, তাহলে নিচের মত একটি দৃশ্য আসবেঃ

অর্থাৎ সফটওয়্যারটি ইন্সটল হওয়া শুরু করছে তাই সবুজ রং এর মাধ্যমে স্ট্যাটাস দেখাচ্ছে ।
এরপর আর একটি চিত্র নিচের মত আসবেঃ

কাজ এখানেও একই Next > এ ক্লিক করুন তারপর নিচের মত একটি এন্টারফেচ আসবেঃ

তার পর সর্বশেষ বার্তা হিসেবে নিচের মত আসবেঃ

এখানে Close বাটনে ক্লিক করার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ইন্সটল করার ঝামেলা থেকে বাঁচুন ।
বিঃ দ্রঃ উপরে যে গুলো লাল রং এর দাগ দ্বারা চিহ্নিত সেগুলোতে ক্লিক করবেন ।
** সফটওয়্যার তো ইন্সটল করা হল এখন ADT (Android Developer Tools) এর মুখ দেখা যাক । যাই হোক প্রথমে ADT Bundle টাকে Extract করে নিনঃ

তারপর মাউস এর ডান বাটন চেপে Extract All লেখায় ক্লিক করুন । নিচের মত আসবেঃ

এখানে Extract লেখায় ক্লিক করুন । তারপর এরকম আসবেঃ

কাজ শেষ হলে ফাইলটিকে নিচের মত দেখাবেঃ

এর ভিতর প্রবেশ করুন তাহলে নিচের মত আসবেঃ

এখন eclipse নামক ফোল্ডারে প্রবেশ করুন, তাহলে নিচের মত আসবেঃ

এগুলোর মধ্য হতে অর্থাৎ লাল দাগের ভিতর চিহ্নিত eclipse.exe তে ক্লিক করুন ।
তাহলে নিচের মত আসবেঃ

এবং এর ভিতর নিচের মত আসবেঃ

এর ভিতর অন্য কোন মেসেজ আসলে সেখানে Yes/No or Finish বুঝে ক্লিক দিন অথবা সমস্যার কথা আমাদের গ্রুপে টিউন দিন ।
আগামী টিউটোরিয়াল গুলো দেখার আমন্ত্রণ জানিয়ে আজ এখানেই শেষ করছি ।
No comments:
Post a Comment